প্রাইম ডেস্ক »
চট্টগ্রামে এক মাস সাত দিন পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার পাঁচের নীচে নেমেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামের করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত আজকের প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, এন্টিজেন টেস্ট ও নগরীর সরকারি-বেসরকারি দশ ল্যাবে গতকাল রোববার চট্টগ্রামের ২ হাজার ১৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ১০৭ পজিটিভের মধ্যে শহরের ৬৯ জন এবং ১২ উপজেলার ৩৮ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৩১৪ জন। এর মধ্যে শহরের ৯১ হাজার ১০৭ জন ও গ্রামের ৩৪ হাজার ২০৭ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় ৭ জন, পটিয়ায় ৬ জন, ফটিকছড়ি ও সাতকানিয়ায় ৪ জন করে, মিরসরাইয়ে ৩ জন, হাটহাজারী, রাউজান, সীতাকু-, সন্দ্বীপ, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, ও বাঁশখালীতে ২ জন করে রয়েছেন। গতকাল করোনায় শহর ও গ্রামে কোনো রোগি মারা যায়নি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৬০ জনই রয়েছে। এতে শহরের ৭৩৪ জন ও গ্রামের ৬২৬ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সর্বশেষ পাঁচ শতাংশের নিচে সংক্রমণ হার ছিল ৭ জানুয়ারি। ওইদিন ৭৬ জন নতুন বাহক শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তবে পরদিন ৮ জানুয়ারি সংক্রমণ হার বেড়ে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ হয়। এদিন নগরীর এক রোগিরও মৃত্যু হয়। এরপর থেকে সংক্রমণ হারের টানা উর্ধ্বমুখী প্রবণতা ছিল। গত কয়েক দিনে হার কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
ল্যাবভিত্তিক আজকের রিপোর্টে দেখা যায়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে গতকাল সর্বোচ্চ ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে শহরের ১২ ও গ্রামের ৭ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ২০৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৬ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে ৬৮টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২টি করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ৩৩টি নমুনায় শহরের ২ ও গ্রামের ১টিতে ভাইরাস ধরা পড়ে। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ১৮ টি নমুনার মধ্যে শহরের ২টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে গতকাল ৯০ জনের এন্টিজেন টেস্ট করানো হয়। এতে গ্রামের ৮ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত বলে জানানো হয়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩৫৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ৯ ও গ্রামের ৮টিতে করোনার জীবাণু মিলে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৫১ টি নমুনায় শহরের ৪ ও গ্রামের ৮ টিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৩ ও গ্রামের ২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এপিক হেলথ কেয়ারে ১০৬ জনের নমুনায় শহরের ১১ ও গ্রামের ১ জনের শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৬৪ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৬টি সংক্রমিত পাওয়া যায়। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ২৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৪ ও গ্রামের ১টি করোনায় আক্রান্ত বলে জানানো হয়।
এদিন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), ল্যাব এইড ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত ল্যাবরেটরিতে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পরীক্ষার জন্য যায়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, শেভরনে ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৭ দশমিক ৭৬, চমেকহা’য় ২ দশমিক ৯৪, চবি’তে ৯ দশমিক ০৯, আরটিআরএলে ১১ দশমিক ১১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪ দশমিক ৮১, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৪ দশমিক ৭৮, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ২ দশমিক ১৮, এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ১১ দশমিক ৩২, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৯ দশমিক ৩৭ এবং এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অন্যদিকে এন্টিজেন টেস্টে আক্রান্তের হার নির্ণিত হয় ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।