প্রাইম ডেস্ক »
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং আজ বলেছেন, বেইজিং ইউক্রেন ইস্যুত রাশিয়ার পক্ষ নিচ্ছে না বরং চীন সংলাপের মাধ্যমে চলমান ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
তিনি আজ চীনা দূতাবাসের উদ্যোগে নগরীর একটি হোটেলে ‘স্প্রিং ডায়ালগ উইথ চায়না’ শিরোনামে এক প্রেস ইভেন্টে এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন মনে করে সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখ-তার প্রতি সম্মান দেখানো ও রক্ষা করা উচিত এবং জাতিসংঘ সনদের লক্ষ্য ও মূলনীতিসমূহ আন্তরিকভাবে মেনে চলা উচিত।
তিনি বলেন, চীনের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সুস্পষ্ট এবং ইউক্রেন ইস্যুতেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই চীনের বন্ধু উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন এ সংকট সম্পর্কে আবেগপ্রবণ মনোভাব থেকে বিরত থেকে ঠা-া মাথায় আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে।
‘বাংলাদেশ শান্তি চায়’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জিমিং বলেন, চীনও ঠিক তাই চায়।
সম্প্রতি ‘নিক্কেই এশিয়া’য় প্রকাশিত ‘চীন বাংলাদেশে ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ স্থাপনের পরিকল্পনায় ভারত চিন্তিত’ একটি প্রতিবেদন প্রসঙ্গে মন্তব্য চাওয়া হলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন বাংলাদেশসহ কোনো বিদেশি ভূমিতে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করবে না।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট, অবকাঠামো, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কোয়াড, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ও তাইওয়ান সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় তার চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জিমিং বলেন, বর্তমান মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা নিয়ে কিছু ‘গঠনমূলক’ মনোভাব দেখানোয় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষদের রাখাইনে প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
বিস্তারিত না জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় চলতি বছর এ সংকট সমাধানে কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা করছেন চীন।
বাংলাদেশ বর্তমানে কক্সবাজার জেলায় ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে। এদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের পর থেকে সেখানে এসেছে। যাকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য অধিকার গোষ্ঠী জাতিগত নিধন ও গণহত্যার প্রামাণ্য উদাহরণ বলে অভিহিত করেছে।
রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার ঘাটতির কারণে দুবার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও গত সাড়ে চার বছরে একজন রোহিঙ্গাও দেশে ফেরেনি।