প্রাইম ডেস্ক »
শিক্ষা জীবনে পরিচয়। সেখান থেকে ভালোলাগা। একপর্যায়ে সেই ভালোলাগা রূপ নেয় ভালোবাসায়। এরপর হাতে হাত রেখে রঙিন ভুবনে স্বপ্নে বিভোর হতে থাকেন দুজন। কিন্তু এমন স্বপ্ন সুখের রঙিন উঠোনে হঠাৎ নেমে আসে ঘনকালো অন্ধকার। ফাহমিদার স্বপ্নরাঙা মায়াবী শরীরে বাসা বাধে মরণঘাতী ক্যানসার। উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় রাজধানীর এভারকেয়ার ও পরবর্তীতে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে।
দীর্ঘ এক বছর সেখানে চিকিৎসা নেয়ার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন- বেঁচে থাকার আর সম্ভাবনা নেই ফাহমিদার। কিন্তু এ অবস্থায়ও প্রিয়তমার হাতটি ছেড়ে দেননি স্বপ্নে বিভোর মাহমুদুল হাসান। ছায়া হয়ে তার পাশে থেকে একপর্যায়ে নিয়ে নেন কঠিন সিদ্ধান্ত। মৃত্যু পথযাত্রী ফাহমিদাকে হাসানের বিয়ের প্রস্তাবে হতবাক হন সবাই। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের বেডেই এক টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
হাসপাতালেই করা হয় বিয়ের সব আয়োজন। ফাহমিদাকে পরানো হয় লাল বেনারশি শাড়ি, গলায় সোনার হার। বর হাসান পরেন পাঞ্জাবি-পায়জামা। দুজন মিলে কেক কাটেন, হয় মালা বদল। খেজুর মিষ্টি খাওয়ানো হয়। ক্ষণিকের জন্য মরণঘাতী ক্যানসারকে জয় করে ফাহমিদা হয়ে ওঠেন অন্য এক জগতের বাসিন্দা।
কিন্তু সেই বেঁচে থাকা আর হলো না ফাহমিদার। বিয়ের ১২ দিনের মাথায় সবাইকে ছেড়ে ফাহমিদা পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। সোমবার সকালে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
দক্ষিণ বাকলিয়ার বাসিন্দা ফাহমিদা কামাল ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেঝ। ফাহমিদা আইইউবি থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেন। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন সাকীর নাতনি।
অন্যদিকে, মাহমুদুল হাসানের বাড়ি চকরিয়ায়। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করেন।