প্রাইম ডেস্ক »
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ৫০ দিন পেরিয়েছে। এই ৫০ দিন যুদ্ধ সহ্য করে টিকে থাকার জন্য দেশবাসীকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া এক বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেন, তারা (রাশিয়া) ভেবেছিল সহজেই জিতে নেবে। কিন্তু তারা জানত না ইউক্রেনীয়রা কতটা সাহসী, আমরা স্বাধীনতাকে কতটা মূল্য দিই এবং আমরা যেভাবে চাই সেভাবে বাঁচার সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দেশের জন্য লড়াই করা নাগরিকদেরও প্রশংসা করে বলেন, আমাদের ৫০ দিনের প্রতিরক্ষা একটি অর্জন। লাখ লাখ ইউক্রেনীয়দের অর্জন।
এ সময় রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা কোন কোন উপায়ে লড়াই করেছেন তার তালিকাও তুলে ধরেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ফ্ল্যাগশিপ যুদ্ধজাহাজ মস্কভা মিসাইল ক্রুজার ডুবে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা বলে সমুদ্রের তলদেশে থাকার পরও রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ চলতে পারে, তারা দেখুক।
প্রসঙ্গত, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম জাহাজটিতে কিভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে দুই রকম দাবি করেছে কিয়েভ আর মস্কো।
কিয়েভের দাবি, যুদ্ধজাহাজে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মিসাইল হামলায় জাহাজটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত জাহাজটিতে বুধবার হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের ওডেসার গভর্নর।
এর আগে রাশিয়াও মস্কভা মিসাইল ক্রুজার নামে ওই যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। যদিও এর কারণ হিসেবে তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার কথা স্বীকার করেনি।
ওই হামলার ব্যাপারে টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় ওডেসার গভর্নর ম্যাক্সিম মার্চেনকো জানান, কৃষ্ণসাগর পাহারা দেওয়া নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র রুশ জাহাজের মারাত্মক ক্ষতি করে।
তিনি আরও বলেন, জাহাজটি ব্যাপকভাবে পুড়ে গেছে। আর এই উত্তাল সাগরে তারা (রাশিয়া) কোনো সাহায্য পাবে কি না তা নিশ্চিত নয়। রুশ এই যুদ্ধজাহাজটিতে ৫১০ জন কর্মী আছেন। কি হয়েছে আমরা বুঝতে পারছি না।
এদিকে কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। বুধবারের এই ঘটনার পর মস্কো জানিয়েছে, আগুন ধরে যাওয়ার পর একটি বিস্ফোরণের কারণে রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের একটি ফ্ল্যাগশিপ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া জাহাজে অবস্থানরত ক্রুদেরও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি।
তবে ইউক্রেনীয় হামলার কথা স্বীকার না করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজে থাকা গোলাবারুদ বিস্ফোরিত হওয়ার পর মস্কভা মিসাইল ক্রুজারে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়।
যদি ইউক্রেনের দাবি সত্যি হয়, তাহলে ১২,৪৯০ টন ওজনের মস্কভা হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিপক্ষের হামলায় ডুবে যাওয়া সবচেয়ে বড় রুশ যুদ্ধজাহাজ।
ইউক্রেন হামলার পর এ নিয়ে দুটি যুদ্ধজাহাজ হারাল রাশিয়া। এর আগে গত ২৪ মার্চ রাশিয়ার অ্যালিগেটর শ্রেণির ল্যান্ডিং সাপোর্ট জাহাজ সারাতোভ আজভ সাগরের রাশিয়ার দখলকৃত বের্দিয়ানস্কের পোতাশ্রয়ে ইউক্রেনের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে যায়।