প্রাইম ডেস্ক »
চট্টগ্রামের কুমিরা-সন্দ্বীপ নৌ রুটে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে একটি স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৩ শিশুর এখনও খোঁজ মেলেনি। সন্ধ্যা ৬টায় আজকের মতো উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন প্রশাসন।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স¤্রাট খীসা।
তিনি বলেন, ২২ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে একটি স্পিডবোট উল্টে যায়। সেখানে স্পিডবোট ডুবে এখনো ৩ শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে জমজ দুই বোনও রয়েছে। সকালে উদ্ধার হওয়া কিশোরী নুসরাত জাহান আনিকা (১২) একই পরিবারের সন্তান।
সন্দ্বীপ জেবেননুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আনোয়ার হোসেন জানান, ওমান প্রবাসী স্বামী আলাউদ্দিনকে ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিদায় দিয়ে কয়েকদিন চট্টগ্রাম শহরে আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করে তিন কন্যাকে নিয়ে সন্দ্বীপ ফিরছিলেন গৃহবধু পান্না বেগম। ফেরার পথে কাল বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে স্পিডবোট উল্টে নিজে কোনরকমে তীরে পৌঁছালেও নিখোঁজ হয় তার তিন কন্যা। সকালে বড় মেয়ে আনিকার লাশ উদ্ধার করা গেলেও এখনও জমজ দুই মেয়ে আলিফা ও আদিফা নিখোঁজ রয়েছে। বুকেরধন তিন কন্যাকে হারিয়ে শোকে পাগল প্রায় মা পান্না বেগম।
তিনি বলেন, একই স্পিডবোটে সন্দ্বীপের সমির উদ্দিন স্ত্রী সীমা বেগমসহ দুই সন্তান নিয়ে ফিরছিলেন। বোট উল্টে যাওয়ার পর ছোট মেয়ে আনিশাকে (৫) তার বাবা সমির উদ্ধার করলেও বড় ছেলে সৈকত (১০) এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে স্পিডবোটটি দুর্ঘটনায় পড়ে। ১৮ জন তীরে উঠতে সক্ষম হলেও ৩ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু সাড়ে ৯ ঘণ্টায়ও তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের আর জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে আজকের মত অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছি।’ আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে লাশের খোঁজে আবার অভিযান চলবে বলে তিনি জানান।
সন্দ্বীপ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন বলেন, মাঝ নদীতে আসার পর কালবৈশাখী ঝড়ের মুখে পড়ে স্পিডবোটটি। কোনমতে কূলের কাছাকাছি এসে স্পিডবোটের পাখা জেলেদের বিহিন্দি জালের দড়ির সাথে আটকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কয়েকটি ঢেউ এসে বোটটি উল্টে দেয়।
তিনি জানান, সন্দ্বীপের আবহাওয়া ভালো নয়, সাগর এখনও উত্তাল রয়েছে। এ জন্য উদ্ধার অভিযান চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ৩ জনকে উদ্ধারে জন্য কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দিনভর কাজ করেছেন। আগামীকাল পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।