শুক্রবার, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
spot_img
Homeএই মুহুর্তেচলতি মাসে ১৫ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে

চলতি মাসে ১৫ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে

প্রাইম ভিশন ডেস্ক »

ঈদের আগে অব্যাহতভাবে বাড়ছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। চলতি এপ্রিল মাসের ২৭ দিনেই ১৮২ কোটি ২০ লাখ (১.৮২ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৫ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এ হিসাবে ঈদের আগে এই ২৭ দিনে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বৃহষ্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে আগামী ২ অথবা ৩ মে ঈদ উদযাপিত হবে। এপ্রিলের পুরো মাসের রেমিট্যান্সের তথ্য ঈদের পর ছাড়া পাওয়া যাবে না।

তবে, এই ২৭ দিনে দেশে যে রেমিট্যান্স এসেছে, সে হারে এলে এপ্রিল শেষে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার বা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।

তবে এ আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম, এমনকি গত মার্চের তুলনায়ও কম। এর আগে, গত বছরের মে মাসে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি (২.১৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ গত মার্চে ১৮৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

প্রবাসী আয়ে এখন আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া প্রবাসী আয় আসার পথও সহজ হয়েছে। ব্যাংকে, ব্যাংক হিসাবের বাইরে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সহজেই প্রিয়জনের কাছে টাকা পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা। তবে সম্প্রতি খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় অবৈধ পথে আয় পাঠালে তাতে প্রতি ডলারে পাঁচ টাকা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি অবৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে বলে ধারণা খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। আর খোলাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯০ টাকার বেশি।

জানা গেছে, গত মার্চে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৮৬ কোটি ডলার। আর চলতি মাসের ১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত এসেছে প্রায় ১৭২ কোটি ডলার। তবে ২৭ ও ২৮ এপ্রিলের হিসাব যুক্ত হলে এ মাসে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ মার্চের চেয়ে বেশি হতে পারে।

করোনার মধ্যে দেশে প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছিল। সেই প্রবাহে কিছুটা ছেদ পড়েছিল গত বছরের শেষের দিক থেকে। গত মার্চে এসে আবার প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। গত মার্চে সব মিলিয়ে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল, তা ছিল গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রতিবছরই রমজান মাসে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ে। এবার অবশ্য রমজান শুরু হওয়ার আগেই প্রবাসী আয়ে চাঙাভাব দেখা যায়। তাতে ঈদকে সামনে রেখে রেকর্ড প্রবাসী আয় আসবে বলে ধারণা করেছিলেন ব্যাংকাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রবাসীরা দেশে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ ডলার বা সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা দেশে পাঠান। ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ১২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার প্রবাসী আয়, যা ছিল ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে মার্চে তা বেড়ে ১৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলারে ওঠে।

ব্যাংকাররা বলছেন, দেশে এখন ডলারের সংকট রয়েছে। এ জন্য ব্যাংকগুলো বেশি টাকা দিয়ে হলেও প্রবাসী আয় আনছে। তবে খোলাবাজারে ডলারের দাম বেশি থাকায় ব্যাংকের বদলে অবৈধ পথেই প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠাতে বেশি আগ্রহী।

ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো প্রবাসী আয়ে সরকার আগে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিত। গত ১ জানুয়ারি থেকে প্রণোদনার হার বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়। নগদ প্রণোদনা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসীরা জানুয়ারিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রবাসী আয় পাঠিয়েছিলেন, যদিও ফেব্রুয়ারিতে তা আবার কমে যায়।

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপের শুরুতে প্রবাসী আয় কিছুটা ধাক্কা খেলেও ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড হয়। এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা বলেন, সেই সময় বিদেশে যাতায়াত প্রায় বন্ধ ছিল। এ জন্য অবৈধ পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ পথেই আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন।

রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বাড়ার কারণে অস্বাভাবিক আমদানি বৃদ্ধির পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৫৪ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে, ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) রফতানির তথ্য প্রকাশ করেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি। তাতে দেখা যায়, এই সময়ে ৩৮ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছেন রফতানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।

প্রাইম/এসবি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়