প্রাইম ভিশন ডেস্ক »
সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এবারের এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘অশনি’। এটি এখস দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত। তবে এটি কোন স্থান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, এটি আরো এগিয়ে ভারতের উপকূল ঘেঁষে বাঁক নিয়ে আবার বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে সেই বাঁকটি নেবে কি না- এটা জানতে আরো অপেক্ষা করতে হবে।
রোববার সকালে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে ঘূর্ণিঝড়টি এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে ছিল। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
‘অশনি’ এখন ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার গতিতে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে এগিয়ে গেলে ভারতের উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করার কথা।
কিন্তু ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর ও আমেরিকার নৌ-বাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার ‘অশনি’র যে সম্ভাব্য গতিপথ দেখিয়েছে সেটা অনুযায়ী, এটা উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের কাছে এসে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে। বাঁক নেয়ার পর এর গতিপথ হতে পারে ভারতের উপকূল ঘেঁষে বাংলাদেশের দিকে। তবে শেষ মুহূর্তে পূর্বাভাস অনুযায়ী ‘অশনি’ এই বাঁক নেয় কি না সেটা দেখার বিষয়।
কোন দিকে যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (মৌসুম ভবন) জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরো শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আগামী ১০ মে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। এরপর এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে উড়িষ্যা উপকূল অভিমুখে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে যেতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের উপ-পরিচালক সানাউল হক মন্ডল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি এখন পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর গতিপথ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। এটি যদি গতিপথ পরিবর্তন করে তখন আমরা জানাবো।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি যদি মোড় নিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসার সম্ভাবনা থাকে, তখন আমরা সতর্ক সংকেত বাড়িয়ে দেব। এখনই এটির গতিপথ নিয়ে নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। এখন যেভাবে এগোচ্ছে তাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যার দিকে যাওয়ার কথা।
কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, সোমবারের আগে নিশ্চিত করে পূর্বাভাস দেওয়া যাচ্ছে না। এখনই বলা যাচ্ছে না এই ঘূর্ণিঝড় কোন স্থানের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে। তবে পূ্র্বাভাস মডেলগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ১০ মে থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ১১ মে থেকে বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলো এবং ১২ ও ১৩ মে দেশব্যাপী বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গ ১৩ ও ১৪ মে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।