প্রাইম ডেস্ক »
ইউক্রেনে টানা সপ্তম দিনের মতো অভিযান অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এরই মধ্যে ইউক্রেনের বৃহত্তম শহর খারকিভ দখলে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর চতুর্থ দিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) রুশ পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষ সতর্ক অবস্থায় রাখতে নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপরই যুক্তরাজ্যের লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ফুটার ভয়ানক তথ্য প্রকাশ করলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের পারমানবিক সতর্কতা অমূলক নয়। যুক্তরাজ্যের লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ফুটার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আসলে আমরা কেউ নিরাপদ নই। ভ্লাদিমির পুতিন এক ঘণ্টারও কম সময়ে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করে গোটা লন্ডনকে ধ্বংস করে দিতে পারেন।
অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ফুটার বলেন, রুশ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করার মতো ক্ষমতা ব্রিটেনের নেই। আমরা এয়ারক্রাফ্ট বম্বারকে প্রতিহত করতে পারি। কিন্তু রাশিয়ার বেশিরভাগ পারমাণবিক অস্ত্রই ক্ষেপণাস্ত্র। খুব বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসছে এটা আমরা দেখতে পারব। কারণ উত্তর ইয়র্কশায়ারের ওপর আমাদের স্যাটেলাইট রয়েছে।
এ অস্ত্র বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, রুশ পারমাণবিক অস্ত্রে ধ্বংস হতে পারে লন্ডনের একটা বড় অংশ। মৃত্যু হতে পারে হাজার হাজার মানুষের। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে পারমাণবিক অস্ত্র লন্ডনে এসে পৌঁছাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে গোটা শহর খালি করা কার্যত অসম্ভব।
এ পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ বলেন, তেমন কিছু ঘটলে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বাঙ্কার রয়েছে। তারা সেখানে আত্মগোপন করে প্রাণরক্ষা করতে পারবেন। কিন্তু অকালে মৃত্যু হবে সাধারণ মানুষের।
তবে পারমাণবিক হামলা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের হুমকির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন, তার পারমাণবিক বাহিনী উচ্চ সতর্কতার মধ্যে রয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তার একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে এবং একইসঙ্গে এটি ইউক্রেনে সংগঠিত বাজে পরিস্থিত থেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও বটে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ব্রিটেনও একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং পুতিন জেনে রাখবেন যে, পারমানবিক অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু ঘটলে পশ্চিমাদের দিক থেকেও সমপরিমাণ কিংবা কঠোর জবাব মিলবে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধলে এতে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হবে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরআইএ লাভরভের বরাত দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনের হাতে যদি পারমাণবিক অস্ত্র আসে তাহলে তা রাশিয়ার জন্য সত্যিকারের হুমকি তৈরি করবে।