প্রাইম ডেস্ক »
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রোববার (৬ মার্চ) বিকাল সোয়া তিনটার দিকে জায়েদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণের করা আবেদনের শুনানি করে এমন আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
গত ৩ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সিএমপি (বিবিধ দেওয়ানি দরখাস্ত) করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। হাইকোর্টের লিখিত রায় প্রকাশ না হওয়ায় তাকে বিবিধ দেওয়ানি আপিল (সিএমপি) করতে হয়েছে।
এদিকে, চেম্বার আদালতের আদেশের পর রোববার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।
এ সময়, সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, ‘চেয়ারটা নিয়ে কেনো এত যুদ্ধ? আমি কিন্তু প্রথম থেকেই বলেছি, আমি এই চেয়ারটা নিয়ে যুদ্ধ করছি না। আমার যুদ্ধটা আসলে একজন অপশিল্পীর বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে’।
বাংলা সিনেমার এই অভিনেত্রী আরো বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, কোর্টের বারান্দায় বারান্দায় না ঘুরে আমি যেন অভিনয় করি। আমি এখনও কাজ করে যাচ্ছি। আমি খুব ভালো দুটি ব্যবসা চালাই। যখন আপনি আমাকে কোর্টে নিতে বাধ্য করেছেন, তখন আমি তো কোর্টে যাবোই। আমি গিয়েছি, এবং আদালত থেকে ন্যায় বিচার পেয়েছি।
এই সময় পাশে থাকা চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক জানান, শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে যে কাগজ দেখিয়ে জায়েদ খান শপথ নিয়েছেন, সেটি ‘জাল’।
এই প্রসঙ্গে সাইমন বলেন, ‘আসলে ওই কাগজ ভুয়া ছিল। কাগজ দেখতে চেয়েছিলাম কিন্তু উনি কাউকে দেখাননি। কাগজটা সঠিক ছিল না বলে উনি কাউকে সেটি দেখায়নি। ’
জায়েদ খান ‘জাল ও অনৈতিক কাগজ’ দেখিয়ে শপথ নিয়েছেন উল্লেখ করে সাইমন বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলাম। উনি বলেছেন, কাগজ সঠিক কিনা জানেন না। তবে জায়েদ খান যে কাগজ দেখিয়েছেন সেটা আইন সিদ্ধ নয়।
গত বুধবার (২ মার্চ) জায়েদ খানের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।
২ মার্চ রায়ের পর জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে বাঁধা কেটে যায়। এরপর তিনি শিল্পী সমিতিতে গিয়ে শপথ পড়েন।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আদালতের কার্যতালিকায় থাকলেও সেদিন শুনানি হয়নি।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি জায়েদের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এক সপ্তাহের মধ্যে রিটের বিবাদীসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এ আদেশের বিরুদ্ধে গত ৯ ফেব্রুয়ারি লিভ টু আপিল করেন নিপুণ। শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন এবং শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখেন এবং হাইকোর্টের জারি রুল নিষ্পত্তি করতে আদেশ দেন।