প্রাইম ডেস্ক »
করোনার প্রকোপ কমে আসায় এবারের ঈদে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে যাবেন বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি বলে আশঙ্কা করছে সংগঠনটি।
রোববার বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের এসব কথা জানানো হয়।
‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবি’ শিরোনামে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করে, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। এতে আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সকল পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে দাবি জানান তিনি।
অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও পরিবহন সংকট, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাতে কিছু পরিবহন মালিক-চালক মরিয়া হয়ে উঠেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভাড়ানৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কাগুজে বাঘের মতো হুশিয়ারি উচ্চারণ করলেও দৃষ্টান্তমূলক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এবার সব পথে দ্বিগুণ-তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হবে। তাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি করে ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও যানজটমুক্ত করার দাবি জানান।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি মনে করেন, এবার চাহিদা বেশি হওয়ায় সড়কের ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাদিউজ্জামান বলেন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ২০ রমজানের পর বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারের সদস্যরা, যাদের কাজ নেই, তাদেরকে ২০ রমজান থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। যারা কর্মজীবী, ছুটি পেলে তারা পরে যাবেন। তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।