প্রাইম ডেস্ক »
ইউক্রেনে হামলার শাস্তি হিসেবে রাশিয়ার ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এবং রুশ অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে চালানো হয়েছে মিসাইল হামলা।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, ইউরোপে যুদ্ধ ফিরিয়ে এনেছেন পুতিন। ইইউ এর জন্য তাকে দায়ী করবে।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর কিছুক্ষণ পর দেওয়া বিবৃতিতে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ইইউ প্রধান বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতির কৌশলগত বিভিন্ন খাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে। আমরা রাশিয়ার অর্থনীতির ভিত্তি দুর্বল করে দেবো, যাতে করে তারা আধুনিকায়নের দিকে না যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমরা ইইউয়ে থাকা রুশ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করব, আর রুশ ব্যাংকগুলো যেন ইউরোপীয় আর্থিক বাজারে ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা করব।
বুধবার প্রথম দফায় বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়েছে ইইউ। এরমধ্যে রয়েছে- রুশ রাজনীতিবিদদের কালো তালিকাভুক্ত করা ও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া দুটি অঞ্চলের সাথে বাণিজ্য কমিয়ে আনা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন পলিসি চিফ জোসেফ বোরেল বলেন, এ নিয়ে সন্ধ্যায় বৈঠকে বসবেন ব্লকের নেতারা। আর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা চিন্তা করা হচ্ছে তা এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটা ইউরোপের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়…রাশিয়ার নেতাদের এর জন্য কঠিন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়তে হবে।
ইউক্রেনের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের কথাও জানিয়েছেন তিনি। যেসব জায়গায় রাশিয়ার হামলা হবে সেখান থেকে নিজেদের কর্মীসহ বাকিরা যাতে নিরাপদে অন্য কোথাও সরে যেতে পারেন সে জন্য সহযোগিতা থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হামলার ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। প্রধান বিমানবন্দরে কাছে গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে।
তিন দিক থেকে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গোলাবর্ষণের পর পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ দিক দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে রুশ সাঁজোয়া বহর।
দক্ষিণ দিকে ক্রাইমিয়া থেকে ইউক্রেন ভূখণ্ডে রুশ সেনাদের অনুপ্রবেশের ছবি প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ডিপিএসইউ।
তারা জানায়, প্রথমে গোলাবর্ষণ করা হয়। এরপর রুশ ট্যাংকগুলো সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে প্রবেশ করে।
এছাড়া বেলারুশ সীমান্ত দিয়েও ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে রুশ বাহিনী। পূর্বে বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চল দিয়ে রুশ সাঁজোয়া বহরকে ইউক্রেনে ঢুকতে দেখা যায়। ইতোমধ্যে তারা লুহানস্কের দুটি শহর দখল করে নিয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ বেলারুশের সেনারাও রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে অভিযানে যোগ দিচ্ছে। অর্থাৎ ইউক্রেনের উত্তর দিক থেকেও এখন আক্রমণ হচ্ছে।