প্রাইম ডেস্ক »
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে এখন বিএনপি নেতাদের উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা যাচ্ছে। অথচ করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে তাঁদের দাঁড়াতে দেখা যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘এত দিন গ্রাম-গ্রামান্তরে তাদের কোনো খবর ছিল না।
নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের ধীরে ধীরে দিনে-রাতে বিভিন্ন নিমন্ত্রণ-দাওয়াতে দেখা যাচ্ছে। ‘ তারা আবার মানুষের কাছে আসার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে ড. হাছান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাঁদের প্রশ্ন রাখতে হবে, যখন বন্যা হয়েছিল, আপনারা তখন কোথায় ছিলেন? করোনাকালে একমুঠো চাল নিয়ে কেন মানুষের কাছে আসেননি?’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শেখ হাসিনার নেতৃতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, কয়েক হাজার নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ সদস্যের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীসহ পাঁচ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। আওয়ামী লীগের বহু এমপি মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আবার সুস্থ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করছেন, এমন ঘটনা বহুজনের ক্ষেত্রে ঘটেছে। ‘
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘এই করোনাকালে রাঙ্গুনিয়াসহ সারা দেশে আমাদের নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে, সেই ধান আবার মাথায় তুলে কৃষকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু অন্য কোনো দলকে দেখা যায়নি। যখন নির্বাচন আসছে, আমরা যেই কাজগুলো করেছি, সেই কাজ ভুল ধরার জন্য এখন তাদেরকে উঁকিঝুকি দিতে দেখা যাচ্ছে। তাই আমি জনগণ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানাব তাঁদের প্রশ্ন রাখার জন্য―এত দিন তাঁরা কোথায় ছিলেন। ’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজকে যখন দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে তখন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে এবং বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপির প্যাডে তাদের মহাসচিব নিজের স্বাক্ষরে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখছেন দেশকে যেন সাহায্য দেওয়া না হয়। দেশের রপ্তানি বাণিজ্য যেন বাধাগ্রস্ত হয়। ‘
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সম্মেলনের মাধ্যমে আপনারা এমন নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন যারা দুঃসময়ে ছিল এবং দুঃসময়ে থাকবে। পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থাকবে। নতুন নেতাকর্মীদের একটু সময় লাগবে। ‘
‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন, এ দেশের খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের সংগঠন, রাজনীতিকে ড্রয়িংরুম থেকে সাধারণ মানুষের কাতারে নিয়ে আসার জন্যই ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেই থেকে বাঙালির সমস্ত আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে যুক্ত থেকেছে। বাঙালির সমস্ত অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের যে মহান স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধকালীন যে সরকার গঠিত হয়েছিল, যে সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যিনি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ, সেই সরকার ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। ’
শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হাশেম মাস্টারের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার উদ্বোধক এবং সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সামশুল আলম তালুকদার প্রধান বক্তা হিসেবে সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম চিশতি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, এইচ এন বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার প্রমুখ এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।