প্রাইম ডেস্ক »
শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ফরচুন বরিশালকে মাত্র ১ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের তৃতীয় শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বোলারদের অনবদ্য নৈপুণ্যে ব্যাকফুটে গিয়েও ম্যাচটি জিতেছে ইমরুল কায়েসের দল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৫১ রান সংগ্রহ করেছিল কুমিল্লা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি বরিশাল। এর মাধ্যমে সাকিবদের স্বপ্ন ভেঙ্গে স্মরণীয় এক জয় পেয়েছে ভিক্টোরিয়ান্সরা।
শেষ ওভারে বরিশালের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। শহিদুল ইসলামের করা প্রথম দুই বল থেকে মাত্র ১ রান নিতে পারেন তৌহিদ হৃদয়। পরের বলে মুজিম উর রহমান নেন ১ রান। এরপর ওয়াইড দিয়ে বসেন শহিদুল।
পঞ্চম বলে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু সেটি তালুবন্দী করতে পারেননি তানভীর। শেষ বলে ৩ রান প্রয়োজন হলেও ১ রানের বেশি নিতে পারেননি হৃদয়। লিটন দাস বল ধরার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে মাতে কুমিল্লা।
এর আগে বরিশালের দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন মুনিম শাহরিয়ার ও ক্রিস গেইল। চলতি আসরে দারুণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করা মুনিম এদিন ব্যাট হাতে ছিলেন চরম ব্যর্থ। আজ রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
তবে মুনিম না পারলেও ফাইনালের আলো নিজের দিকে টেনে নেন এ ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাওয়া সৈকত আলী। ২৬ বলে অর্ধশতক পূরণ করা এ ব্যাটার যখন ৫৮ রানে আউট হন, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখন অনেকটাই বরিশালের হাতে।
গেইল ৩৩ রানে আউট হওয়ার পর সাকিব ৭ রানে ফিরলে ম্যাচ কিছুটা জমে ওঠে। অবশ্য শেষ পাঁচ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে ৩৪ রান প্রয়োজন থাকায় তখনও ফেভারিট ছিল বরিশালই।
নুরুল হাসান সোহান ১৪ ও ব্রাভো ১ রানে আউট হলে ম্যাচে আস্তে আস্তে ফিরে আসে কুমিল্লা। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। মুস্তাফিজের করা ওভারের দ্বিতীয় বলেই নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরলে ম্যাচ অনেকটাই ঝুঁকে পড়ে কুমিল্লার দিকে।
আর শেষ পর্যন্ত চাপ ধরে রেখে ম্যাচটি জিতেছে কুমিল্লাই। দলটির হয়ে নারাইন ও তানভীর দুটি এবং মুস্তাফিজুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম একটি করে উইকেট শিকার করেন।
উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হয় বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন সুনীল নারাইন ও লিটন দাস।
ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। মাত্র দুই ওভারে দলটি নেয় ৩৬ রান। তবে তৃতীয় ওভার থেকেই ছন্দপতনের শুরু। লিটন দাস ৪ রানে আউট হওয়ার পর ব্যক্তিগত ৮ রানের মাথায় রান আউট হন মাহমুদুল হাসান জয়।
এর আগে চলতি বিপিএলে টানা দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করেন নারাইন। ২৩ বলে ৫৭ রানে এই ক্যারিবীয় ফেরার পরই ব্যাটিং ধসে পড়ে কুমিল্লা। মাত্র ২৬ রানের মাঝে ৫ উইকেট হারিয়ে অল্পেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে দলটি।
এ সময় দলের হাল ধরেন মঈন আলী ও আবু হায়দার রনি। দুজনে মিলে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার আগে মঈন করেন ৩৮ রান। রনি সাজঘরে ফেরেন ১৯ রানে।
বরিশালের হয়ে মুজিব উর রহমান ও শফিকুল ইসলাম দুটি এবং সাকিব আল হাসান, ডোয়াইন ব্রাভো ও মেহেদী হাসান রানা একটি করে উইকেট শিকার করেন।