প্রাইম ডেস্ক »
প্রথম ম্যাচে বীরত্বপূর্ণ জয়ের পর আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারিয়েই আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ।
৪৫ রানেই ৬ উইকেট পতনের পরও আফিফ হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজের বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিংয়ে প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ সকলেই যখন জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তখন আফিফ-মিরাজ জুটি সপ্তম উইকেটে রেকর্ড অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে লক্ষে পৌঁছে দেন।
আফিফ এবং মিরাজ দু’জনেই যথাক্রমে ৯৩ এবং ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন। দু’জনই ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে স্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন।
তামিম ইকবালের মতে, এই ধরনের জয় সর্বদা মনোবল বাড়ায় এবং অন্যান্য ম্যাচে এগিয়ে যাবার আত্মবিশ্বাস যোগায়।
বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর দৃষ্টিতে এখনো উন্নতির বেশ কিছু জায়গা আছে। কারণ প্রথম ম্যাচে টাইগারদের টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছিলো এবং প্রত্যাশানুযায়ী বোলিং ভালো হয়নি।
আজ ডমিঙ্গো বলেন, আগামীকাল আমাদের আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। গতকাল আমরা ১৩টি ওয়াইড বল করেছি। আমরা একটা ক্যাচ ফেলেছি। আমাদের স্কোর ৬ উইকেটে ৪৫ রানে ছিল। গতকালের পারফরমেন্সের পর প্রতিটি বিভাগে আমাদেও আরও উন্নতি দরকার। আমাদের একটি দুর্দান্ত জুটি ছিল (যা আমাদের জয় নিশ্চিত করে)।
আগামীকালের ম্যাচে জিততে পারলে ইংল্যান্ডকে টপকে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে চলে যাবে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১৫ ম্যাচে ৯৫ পয়েন্ট রয়েছে ইংল্যান্ডের। ১৩ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশের। ১২ ম্যাচে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থানে ভারত।
সিরিজ জয় বাংলাদেশকে আইসিসি র্যাংকিংয়ে উন্নতি করতেও সাহায্য করবে। বর্তমানে পাকিস্তানের ঠিক পেছনে সপ্তম স্থানে আছে টাইগাররা। আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে টপকে যাবে পাকিস্তানকে।
অন্য দিকে সুপার লিগে কাল প্রথম হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে আফগানিস্তান। এর আগে আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টানা ছয় ম্যাচ জিতে আফগানরা।
গতকাল যেভাবে জয়ের অবস্থা থেকে ম্যাচ হেরেছে তাতে হতাশ আফগানরা। তবে সফরকারী অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদী প্রথম ম্যাচের স্মৃতি ভুলে যেতে চান।
শাহিদী বলেন, আমি মনে করি আমরা ৩০ রান কম করেছিলাম। কিন্তু ফজলের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। তবে লড়াইয়ের জন্য তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। এটি প্রথম ম্যাচ ছিল, তবে আরো দু’টি খেলা বাকি আছে এবং আমরা ঘুড়ে দাঁড়াবো।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত দুই দল নয়টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টিতে জিতে এগিয়ে বাংলাদেশ। তিনটিতে জয় পেয়েছে আফগানরা। জয়-হারের অনুপাত প্রমাণ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে কতটা ভালো দল বাংলাদেশ। যেমনটা আগেই বলেছিলেন দলনেতা তামিম ইকবাল।
টি-২০তে অবশ্য এগিয়ে আফগানিস্তান। কারণ বাংলাদেশের বিপক্ষে ছয় ম্যাচের চারটিতে জিতেছে এবং দু’টিতে হেরেছে তারা।
প্রথম খেলায় অবিশ্বাস্য জয়ের পর, দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দলে কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। যেখানে আফগানিস্তান নিজেদের একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, ইয়াসির আলি চৌধুরি ও মাহমুদুল হাসান জয়।
আফগানিস্তান দল: হাশমত শাহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ (সহ-অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, নাজিব জাদরান, শহিদ কামাল, ইকরাম আলিখিল, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, আজমত ওমরজাই, রশিদ খান, ফজল হক ফারুকি, মুজিব উর রহমান, ইয়ামিন আহমেদজাই ও ফরিদ আহমাদ মালিক।