প্রাইম ডেস্ক »
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ। জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে মরিয়া টাইগাররা।
বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি গাজী টিভি ও টি স্পোর্টস চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করবে।
প্রথম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৬১ রানে সহজ জয়ে এখন সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় শুধুমাত্র সিরিজ জয়ই নয়, ক্রিকেটের যেকোন ফরম্যাটে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন পূরণ করবে টাইগারদের।
সম্প্রতি ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ হাতছাড়া করেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যাওয়ায় ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে টাইগাররা।
এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে আফগানদের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেয়া হবে বাংলাদেশের।
২০১৮ সালে নিজেদের হোম ভেন্যু করে ভারতের হায়দারাবাদে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল আফগানরা।
দুই দলের মধ্যে জয়-পরাজয়ের অনুপাতের দিক থেকে আর একটি জয় বাংলাদেশ সমান অবস্থানে আনবে। এখন পর্যন্ত দু’দল সাতটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে চারটিতে জিতেছে আফগানিস্তান, আর তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ।
যখন মাত্র একটি জয় দিয়ে অনেক কিছু অর্জন করা যায়, তখন হালকা মেজাজে থাকার অবকাশ নেই বাংলাদেশের। আর টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ অবশ্য পরিষ্কার করে জানিয়েছেন, এই সিরিজ জয়ের জন্য তারা কতটা ক্ষুধার্ত।
হেরাথ বলেন, ‘এটা দুই ম্যাচের সিরিজ। সিরিজ জিততে হলে পরের ম্যাচে জিততে হবে। আমি মনে করি না, আমরা কাউকে বিশ্রাম দিচ্ছি এবং আমরা আমাদের সেরা একাদশ নিয়ে খেলতে নামবো।’
ওয়ানডে সিরিজের জন্য চট্টগ্রামে পেস সহায়ক উইকেট প্রস্তুত করেছিলো বাংলাদেশ। তাদের পরিকল্পনা বেশ ভালভাবে কাজে লেগেছে এবং তারা সফলও হয়েছিলো।
তবে মিরপুর ভেন্যুতে সুবিধা পান স্পিনাররাই। তাই সেখানে উইকেট স্পিন ও স্লো হওয়ায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান। কারন সফরকারীদের উঁচু মানের স্পিনার দলে রয়েছে।
সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করতে পারলেই খুশি হবে বাংলাদেশ। মিরপুরের উইকেট ধীর গতির হওয়ায়, স্পিনাররা সহায়তা পেয়েছিলো। কিন্তু রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী এবং মুজিব উর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত আফগানদের স্পিন আক্রমণকে পরাস্ত করে বাংলাদেশি দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং সাকিব আল হাসান। যেটা সিরিজ জিততে এবং এই ফরম্যাটে আফগানদের আধিপত্য ভাঙতে আরও বেশি উৎসাহিত করবে বাংলাদেশকে।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪৪ বলে ৬০ রান করা লিটন দাস বলেন, ‘পুরো বিপিএলে মুজিবের বিপক্ষে খেলাটা আমাদের কিছুটা সুবিধা দিয়েছে। একই সাথে রশিদ ও নবির বিপক্ষে আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিলো এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে আমরা তাদের বিপক্ষে আমাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি এবং তাই আমরা সফল হয়েছি।’
লিটনের ইনিংসটি বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ এনে দেয় । পরে নাসুম আহমেদের ১০ রানে ৪ উইকেট শিকারে, মাত্র ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। সাকিব আল হাসান ১৮ রানে ২ উইকেট নেন।
হেরাথ বলেন, ‘আমি মনে করি, শুরুতে দুই উইকেট পতনের পর লিটনের সাথে ভালো জুটি হয়েছিল। আমাদের বোলিং লাইনআপের সামনে ১৫৬ রান তাড়া করা আফগানদের জন্য সহজ ছিলো না। কৃতিত্ব দিতেই হবে লিটন-নাসুম-শরিফুল-সাকিব ও মুস্তাফিজদের। একটি ইউনিট হিসাবে আমরা একটি দারুন পারফরমেন্স করেছি।’
এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১২৪টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। জয় ৪৪টি, হার ৭৮টিতে। দু’টি ম্যাচে কোন ফল হয়নি।
বাংলাদেশ দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, মুনিম শাহরিয়ার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, শেখ মাহেদি হাসান, ইয়াসির আলী চৌধুরী, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, শহিদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ।
আফগানিস্তান দল : মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হজরত জাজাই, উসমান ঘানি, দারউইশ রাসুলি, নাজিব জাদরান, আফসার জাজাই, করিম জানাত, আজমত ওমরজাই, শরাফুদ্দিন আশরাফ, মুজিব উর রহমান, রশিদ খান, কাইস আহমেদ, ফজল হক ফারুকি, নিজাত মাসুদ ও ফরিদ আহমেদ মালিক।