রবিবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪
spot_img
Homeখেলাধুলাএবারও আফগানদের রাজত্ব

এবারও আফগানদের রাজত্ব

প্রাইম ডেস্ক »

আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় এবং শেষ টি-২০তেও বড় হার দেখেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফিল্ডিং ব্যর্থতায় তিনটি ক্যাচ ছেড়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহর দল। এ ম্যাচ জয়ের ফলে দুই ম্যাচ সিরিজ শেষ হলো ১-১ ব্যবধানে।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচেও টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধাতির ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের সংগ্রহ করে টাইগাররা। জবাবে ১৭.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান করে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানরা।

১১৬ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন জাজাই। আগের ম্যাচের নায়ক নাসুম আহমেদের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন এ বাঁহাতি ওপেনার।

কিন্তু নন স্ট্রাইক প্রান্তের উইকেটের সামনে থেকে নিজের বোলিংয়ে আসা ক্যাচটি হাতের তালুতে রাখতে পারেননি নাসুম। ফলে শূন্য রানেই জীবন পেয়ে যান জাজাই। তবে জাজাইয়ের মতো ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না গুরবাজের।

শেখ মেহেদি হাসানের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই লেগ বিফোরের আবেদন হয়েছিল গুরবাজের বিপক্ষে। আম্পায়ারও আউট দেন। তবে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান এ তরুণ। তাতে অবশ্য তেমন ফায়দা হয়নি তার।

কেননা এক বল পরই টপ এজ হয়ে এক্সট্রা কভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়েন ৩ রান করা গুরবাজ। সেই ওভারেই জাজাইয়ের ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে স্ট্যাম্প ঘেঁষে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। ফলে অল্পের জন্য বেঁচে যান জাজাই।

এরপর আর সুযোগ দেননি তিনি। দেখেশুনে খেলে এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। অন্যদিকে নাসুমের করা পঞ্চম ওভারের প্রথম দুই বলে ছয় ও চার হাঁকিয়ে রান রেট ঠিক রাখেন গনি। তবু পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানিস্তান।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর ফিল্ড ছড়িয়ে গেলেও রান তুলতে খাবি খাচ্ছিলেন জাজাই ও গনি। ফলে ৮ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৪০ রান। কিন্তু সাকিব আল হাসানের করা নবম ওভারে দুই ছয়ের মারে ১৭ রান তুলে নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেন জাজাই।

পরে শরিফুল ইসলামের করা দশম ওভারে বাউন্ডারি হাঁকান উসমান গনিও। এ জুটিতে সহজেই জয়ের পথে হাঁটতে থাকে আফগানিস্তান। এরই মাঝে শেখ মেহেদির করা ১২তম ওভারে আফিফ হোসেন ও ১৪তম ওভারে নাইম শেখ ছেড়ে দেন উসমান গনির ক্যাচ।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে ফের আক্রমণে এলে আবার সাকিবকে জোড়া ছক্কা হাঁকান জাজাই। সেই ওভারের দ্বিতীয় ছক্কার সুবাদে পূরণ হয় জাজাইয়ের ফিফটি ও আফগানিস্তানের দলীয় শত রান। পরের ওভারে বল হাতে নিয়েই ৪৭ রান করা গনিকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ।

এতে অবশ্য লাভ হয়নি তেমন। শরিফুলের করা ১৭তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে স্কোর সমান করেন জাজাই। পরে নাসুমকে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন দারউইশ রাসুলি।

এর আগে ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করেন মুনিম শাহরিয়ার এবং নাঈম শেখ। কিন্তু ওপেনিং জুটি দীর্ঘ হয়নি। মোহাম্মদ নবির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন মুনিম। এক বল পরেই দলীয় ৭ রানে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হন ১০ বলে ৪ রান করে। নাঈমের সঙ্গী হন লিটন দাস। তৃতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকীকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে দর্শনীয় পুল শটে ৬৯ মিটারের ছক্কা মেরে তিনি হাত খোলেন।

দারুণ ফর্মে থাকা লিটন আজ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। আজমতউল্লাহর করা পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ভুল টাইমিংয়ে তিনি ধরা পড়েন শরাফউদ্দিন আশরাফের হাতে। শেষ হয় ১০ বলে ১ ছক্কায় ১৩ রানের ইনিংস। ২২ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর উইকেটে আসেন সাকিব। রশিদ খানের করা সপ্তম ওভারের শেষ বলে নাঈমের বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান নাঈম।

তবে এক ওভার পরেই সেই রশিদ খানের বলে দ্রুত রান নিতে গিয়ে করিম জানাতের সরাসরি থ্রোতে রান-আউট হয়ে শেষ হয় তার ১৯ বলে ২ চারে ১৩ রানের ইনিংস। বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসানও আজ ধুঁকছিলেন। আজমতুল্লাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার সংগ্রহ ১৫ বলে ৯ রান।

রশিদ খানের আগের ওভারে সুইপ করে জোড়া চার মারেন মাহমুদউল্লাহ। লেগ স্পিনার আক্রমণে ফেরার পর প্রথম বলেই আবার মারেন চার।

তবে এরপর যেতে পারেননি বেশিদূর। চমৎকার এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করে দেন রশিদ। রিভিউ না নিয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ভাঙে ৩১ বলে গড়া ৪৩ রানের জুটি। ১৪ বলে তিন চারে ২১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

শেষ ঝড় তোলার জন‍্য মুশফিকুর রহিমের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিজের শততম ম‍্যাচে বেশি দূর যেতে পারলেন না অভিজ্ঞ এই কিপার-ব‍্যাটসম‍্যান। ফারুকিকে তুলে মারার চেষ্টায় ধরা পড়লেন কাভারে।

স্লোয়ার বল বুঝতে পারেননি মুশফিক। শট খেলে ফেলেন আগেভাগেই, সহজ ক‍্যাচ নেন মোহাম্মদ নবি। চারটি চারে ২৫ বলে মুশফিক করেন ৩০।

একই ওভারে শেখ মেহেদীকে ফেরান আজমতউল্লাহ। এদিন রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। আফিফও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলে বড় রানের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় বাংলাদেশ দলের।

শেষদিকে মুস্তাফিজুর রহমানের ৫ বলে ৬ এবং নাসুম আহমেদের ৯ বলে অপরাজিত ৯ বলে ৫ রানের কল্যাণে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১১৫ রানে থামল বাংলাদেশের ইনিংস। এতে নির্ধাতির ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিকরা। এই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় এড়াতে সফরকারী আফগানদের প্রয়োজন ১১৬ রান। আফগানদের হয়ে ফারুকি আর আজমতউল্লাহ সমান ৩টি করে উইকেট নেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়