প্রাইম ভিশন ডেস্ক »
স্ত্রীর ফোনের পর টিটিই বরখাস্তের ঘটনায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ৯ মাস হয়েছে নতুন বিবাহ করেছি, স্ত্রীর আমাকে বুঝে উঠতে আরও সময় লাগবে।
রোববার দুপুরে রেলভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, আমি ১৩ বছরের এমপি। আমার স্ত্রী তো আমার রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে পরিচিত নন। আমার যে আগের স্ত্রী ছিলেন, তিনি নির্বাচন করতে গিয়ে মারা গেছেন। নতুন যাকে স্ত্রী হিসেবে নিলাম, আমাকে বুঝতে তার সময় লাগবে। একদিনে তো এ জায়গায় আমি আসিনি।
তাকে না জানিয়ে স্ত্রীর ওই ফোন করা ঠিক হয়নি বলেও জানান রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, একজন যাত্রী হলে করতে পারে। কিন্তু মন্ত্রীর বউ হিসেবে তিনি সেটি করতে পারেন না। আমার স্ত্রীর যদি রেলের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ থাকে, তা হলে তার উচিত ছিল বিষয়টি আগে আমাকে বলা। এটিই স্বাভাবিক। এই জায়গাটাই কিছুটা ব্যত্যয় হয়েছে বলে আমার ধারণা। যে কারণে আমি মনে করি, টিটিইকে বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি। আমরা তাই সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
আমার স্ত্রীর ওই আত্মীয়দের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি এবং তথ্যটি মিথ্যা বলে জানান তিনি।
স্ত্রীর আত্মীয়কে না চেনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মাত্র ৯ মাস হলো আমার বিয়ে হয়েছে। নতুন যে স্ত্রীকে আমি গ্রহণ করেছি, তিনি ঢাকাতেই থাকেন। তার মামাবাড়ি ও নানাবাড়ি পাবনা। আমি শুনেছি তারা আমার আত্মীয়। এটি এখন ঠিক, যেটি আমিও এখন শুনছি। এর আগে পর্যন্ত আমি জানতাম না, এরা কারা এবং আমার জানার কথাও না। গতকাল পর্যন্ত জানতাম না যে অভিযোগকারীরা আমার স্ত্রীর আত্মীয়। পরে জানতে পেরেছি।
তিন যাত্রীকে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনায় মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আকতার মনির নির্দেশনা ছিল বলে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি। তবে আমার স্ত্রী শুধু অভিযোগ করেছেন, কাউকে সাসপেনশন করতে বলেননি। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির মাধ্যমে পুরো ঘটনা বের হয়ে আসবে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও টিআইবির বিবৃতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার স্ত্রী যদি কোনো ধরনের ভুল করে থাকে… আমার ইনভলবমেন্ট ছিল না। যেটি বলা হচ্ছে বা টার্গেট করা হচ্ছে, এটি ঠিক না।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মে দিবাগত রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে বিনা টিকিটে উঠে পড়েন তিন যাত্রী।
রেলমন্ত্রীর আত্মীয় বলে পরিচয় দেওয়ার পরও তাদের জরিমানা করেন রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলাম। পরে রেলমন্ত্রীর সহধর্মিণীর ফোনের পর বরখাস্ত হন সেই টিটিই।
বৃহস্পতিবার সেই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এ বিষয়ে গতকাল তিনি জানিয়েছিলেন, ওই যাত্রীদের তিনি চেনেন না। তার সঙ্গে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। পরে জানা যায়, ওই তিন যাত্রী রেলমন্ত্রীর সহধর্মিণীর আত্মীয়।
এই দেশে আমরা আরও কত কিছু দেখবো আল্লাহ্ ভালো জানেন