প্রাইম ডেস্ক »
বসন্ত শুরু হয়েছে আরো আগেই, তাই গাছে গাছে দেখা মিলছে সবুজের সমারোহ। চৈত্রের এই দাবদাহে কৃষ্ণচূরার লাল যেনো প্রকৃতিতে যুক্ত করেছে বাড়তি উদ্দীপনা। চারদিকে নানান পাখিদের কলকাকলীতে অনুমান করা যাচ্ছে পহেলা বৈশাখ বুঝি দরজায় কড়া নাড়ছে!
বাঙালির প্রাণের উৎসব এই বর্ষবরণ উদযাপনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। ব্যতিক্রম নয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও।
শিক্ষার্থীরা বৈশাখের মূল আকর্ষণ বাংলার বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে তৈরি করছে মুখোশ, বিশাল আকৃতির মাছ কিংবা পেঁচার মুখ, হাতি, বাঘ, পাখি, পোস্টার ম্যাশ ইত্যাদি।
চারুকলা ইনস্টিটিউট গেলেই চোখে পড়বে কেউ কাগজের তৈরি বিভিন্ন মুখোশে রং করায় ব্যস্ত আবার কেউ আলপনা দিয়ে ডেকে দিচ্ছেন সড়াগুলো। যেনো তুলির আচরে সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ছে চারুকলা প্রাঙ্গণ। এ ছাড়াও অশুভ শক্তিতে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহারের জন্য মুখোশ, ব্যানার-ফেস্টুন তৈরি করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন এই দিনকে নানানভাবে উদযাপন করে স্মরণীয় করে রাখে। পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে পরস্পরের মাঝে শুভেচ্ছা বক্তব্যও বিনিময় হয়। এই দিনের শুভেচ্ছা বাক্য হলো ‘শুভ নববর্ষ’।
এ দিকে ‘শিল্পের প্রয়োজন বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ থেকে পহেলা বৈশাখে সকাল ১০টায় শুরু হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। গান-নাচ এবং কবিতা আবৃত্তিসহ নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে রয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজন।
চট্টগ্রামে ১৯৭৮ সাল থেকে টানা ৪২ বছর ধরে সম্মিলিতভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে আসছে ডিসি হিলে। তবে রমজান মাস হওয়ায় এবার আয়োজন হবে সীমিত সময়ের জন্য। রাতে থাকবে ফানুস উড়ানো উৎসব।
চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী মুস্তাকিম বিল্লাহ তানজিম এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের পহেলা বৈশাখে চারুকলায় শিল্পী রশিদ চৌধুরী নিয়ে সব কাজ পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের জন্য আমরা কয়েকদিন ধরেই কাজ করছি। সবাই আনন্দের সঙ্গে কাজ করছে। টেপা পুতুল, পালকি, হাতি, সাম্পান, লক্ষীপেঁচা, মাটির সরা এবিং ম্যুরাল ইত্যাদির মাধ্যমে বাঙালি ঐতিহ্যকে যেনো রাঙিয়ে তোলা হচ্ছে।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, করোনার কারণে গেলো দুইবছর বৈশাখ পালন করতে পারিনি। এবার সেই পরিস্থিতি নেই। বর্ষবরণ উদযাপনের প্রস্তুতি কয়েকদিন ধরে চলছে। নবীন প্রবীণ সবাই মিলে খুব আগ্রহ নিয়ে কাজ করেছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সবাই উচ্ছ্বসিত।