মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৫
spot_img
Homeসংবাদজাতীয়বাঙালি মাথা নিচু করে না ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বিশ্বকে এ বার্তাই দেয়

বাঙালি মাথা নিচু করে না ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান বিশ্বকে এ বার্তাই দেয়

প্রাইম ডেস্ক »

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সকল অর্জনের মূলে থাকা ‘জয় বাংলা’কে তাঁর সরকার জাতীয় শ্লোগান ঘোষণার মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বকে এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চেয়েছে যে, বাঙালি মাথা নিচু করে নয় বরং মাথা উঁচু করেই চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই জয় বাংলা শ্লোগানটা আজ সকলের হয়েছে এবং এই শ্লোগানের মধ্য দিয়ে আমরা এটাই বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই- আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয় অর্জন করেছি, মাথা নত করে আমরা চলিনা, মাথা নত করে চলবোনা, বিশ্ব দরবারে বাঙালি মাথা উঁচু করেই চলবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাতে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দীপক শ্লোগান ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ঘোষণা উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘জয় বাংলা উৎসব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বনানীস্থ হোটেল শেরাটনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা তাঁর অন্যতম একটা শক্তি ’৭৫ এর বিয়োগান্তক ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তাঁর একমাত্র ছোটবোন শেখ রেহানার কথা উল্লেখ বলেন, আমরা দুজনেই আজকে সব থেকে বেশি খুশি। কারণ এই জয় বাংলা শ্লোগান এদেশের মানুষকে নিজের জীবনটা বিলিয়ে দিয়ে দেশকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে।
যে শ্লোগান দিয়ে এদেশের মানুষ রক্তের অক্ষরে লিখে গেছে-আমি বিজয় আনতে চাই। বাংলাদেশের জয় হবে। আজকে সেই জয় বাংলা আমাদের সকলের, এদেশের মানুষের, বিজয়ী জাতির বাঙালি জাতির, আমাদের মাথা উঁচু করে চলার এ শ্লোগান।
এই শ্লোগান ধারণে তিনি সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কোন ত্যাগ যে বৃথা যায়না আজকে সেটাই প্রমাণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং বিএবি চেয়ারম্যার মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিদাতা শেখ মুজিব’ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ১৯৭১ রেসকোর্সের ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) প্রদত্ত তাঁর ঐতিহাসিক কালোত্তীর্ণ ভাষণ সমাপ্ত করেছিলেন ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করে। সেই থেকে এটি মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী কোটি কোটি জনতার প্রাণের শ্লোগানে পরিনত হয়। নিরস্ত্র বাঙালির অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনার অনুপ্রেরণা হয়ে যায় ‘জয় বাংলা’।
বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা থেকেই বঙ্গবন্ধু এই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি নিয়েছিলেন।

একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১০ মার্চ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে গ্রহণের জন্য হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন। ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ২ মার্চ ২০২২ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জয় বাংলা শ্লোগান এক সময় বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল যেটা অত্যন্ত দু:খজনক। তবে, হ্যাঁ আমরা আওয়ামী লীগ যাঁরা করি আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যাঁরা আমরা ধরে রেখেছি, যারা এদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াস করে এবং মুক্তিযোদ্ধারা- তাঁরা এটা ধরে রেখেছিল। বাধা এসেছে, অনেক সময় অনেক কটুক্তি -সমালোচনা শুনতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও আমরা এই সত্যটাকে ধরে রাখতে পেরেছিলাম বলেই আজকে এটা জাতীয় ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, জয় বাংলা শ্লোগান আমাদের মুক্তি সংগ্রামের শ্লোগান। জয় বাংলা শ্লোগান মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। জয় বাংলা শ্লোগান আত্মত্যাগের শ্লোগান। জয় বাংলা শ্লোগান আমাদের অর্জনের শ্লোগান। যে শ্লোগানের মধ্যদিয়েই আমরা বিজয় অর্জন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য। যে মানুষগুলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ছিল। তিনি বলেন, জাতির পিতা যখন ৬ দফা দিলেন ঠিক তাঁর আগেই ছাত্রলীগকে এই জয়বাংলা শ্লোগানটাকে মাঠে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর অন্তর্নিহিত অর্থ একটাই ছিল- সংগ্রামের মধ্যদিয়ে মানুষের মাঝে স্বাধীনতার চেতনাটাকে জাগ্রত করা এবং এই শ্লোগানের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন। যাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ জাতির পিতা নিয়েছিলেন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়