প্রাইম বিশেষ প্রতিবেদন »
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার আরাকান সড়কে ফুটপাতে হেটে যাওয়ার সময় খোলা নালায় পড়ে গেছে শিশু। দুই নারীর বুদ্ধিমত্তায় রক্ষা পেয়েছে শিশুটি।
বন্দরনগরীর পুরনো চান্দগাঁওয়ের পাঠানিয়া গোদা এলাকার এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ফুটপাত দিয়ে দুই নারী হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা এক শিশুও হাঁটছিল। হাঁটার একপর্যায়ে সাফা মারওয়া ইলেকট্রনিকসের সামনের ফুটপাতে থাকা গর্তে পড়ে যায় শিশুটি। এ সময় দুই নারী কোনোরকমে তাকে টেনে তুলে নেন।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজনও ছুটে আসেন। তোলার পরই শিশুটিকে নিয়ে ওই নারীরা চলে যান। তাদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, নালাটির সংস্কারকাজ হয়েছে। তবে ভালো করে স্ল্যাব বসানো হয়নি। এ কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় লোকজন পড়ে যায়। এর আগেও দুই থেকে তিনজন পড়ে গেছেন। অস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হলেও ফুটপাতের ওপর মোটরসাইকেল চলায় এটি রাখা যায়নি।
চট্টগ্রাম নগরের উন্মুক্ত নালা ও খালগুলো রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এখানে পড়ে একের পর এক মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে।
গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে শিশুসহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের একজনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে গত ৩০ জুন নগরের মেয়র গলি এলাকায় চশমা খালে পড়ে অটোরিকশাচালক ও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। গত ২৫ আগস্ট নগরের মুরাদপুরে চশমা খালে পা পিছলে পড়ে তলিয়ে যান সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ। এখনো তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আর গত ২৭ সেপ্টেম্বর নগরের আগ্রাবাদের মাজারগেট এলাকায় ফুটপাত থেকে পা পিছলে নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার (১৯)। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর নগরের চশমা খালে তলিয়ে যায় শিশু মো. কামাল উদ্দিন (১২)। তিন দিন পর নগরের মির্জা খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে নালা থেকে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। বাহিনীটি বলছে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তি নিজেই নালায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন।
বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের সামনের নালা থেকে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়।
কালুরঘাট ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা বাহার উদ্দিন প্রাইম নিউজ বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি পৌনে ১২টার দিকে নালায় ঝাঁপ দেন। নালার গভীরতা বেশি থাকায় তিনি আর উঠতে পারছিলেন না। সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস তাকে উদ্ধার করে।’
একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও সিডিএ—কেউ এর দায় নিচ্ছে না। এসব মৃত্যুর জন্য উল্টো পরস্পরকে দায়ী করে আসছে দুটি সংস্থা।
কিন্তু সংস্থা দুটির ভূমিকায় চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। সরকারের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন মৃত্যুর জন্য দুটি সংস্থার গাফিলতিকে দায়ী করা হয়।