মঙ্গলবার, মার্চ ১৮, ২০২৫
spot_img
Homeচট্টগ্রামপাহাড়ে উৎসব

পাহাড়ে উৎসব

প্রাইম ডেস্ক »

পাহাড়ে বৈসাবি উৎসবের রঙ লেগেছে। অতীতের সব দুঃখ-কষ্ট-গ্লানি ধুয়ে মুছে ফেলতে বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসালেন চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়।

মঙ্গলবার সকালে তিন দিনব্যাপী উৎসবের প্রথম দিনে বালাঘাটামুখ পুরনো নদীর ঘাটে ফুল ভাসাতে জড়ো হয়েছিলেন দুটি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষেরা।

শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী এবং বয়স্করাও নদীতে ফুল ভাসালেন পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করতে।

বিজু উৎসব কমিটির সদস্য বিকাশ চাকমা বলেন, পুরনো বছরের যত অমঙ্গল এবং দুঃখ-কষ্ট রয়েছে, সেগুলো ধুয়ে মুছে ফেলতে নদীতে ফুল ভাসালেন চাকমারা। দ্বিতীয় দিন মজাদার সব খাবার তৈরি করে অতিথি আপ্যায়নের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করি।

এ উৎসবে চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলা নাটিং এবং বাঁশহরম প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক আয়োজনে মাতানো হয় চাকমা পল্লীগুলো।

বিষু উৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বিষু  হচ্ছে— তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব। এ উৎসবের মূল আকর্ষণ হচ্ছে ঘিলা খেলা। ঘিলা হচ্ছে জঙ্গলি লতায় জন্মানো এক প্রকার বীজ বা গোটা। ঘিলা তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের নানান কাজে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় বস্তু। তঞ্চঙ্গ্যার সম্প্রদায়ের বিশ্বাস-ঘিলার লতায় ফুল থেকে বীজ (গোটা) জন্মালেও এর ফুল পবিত্র দেবংশি (স্বর্গীয়) বস্তু হওয়ায় সাধারণ মানুষ ঘিলা ফুলের দেখা পান না। শুধু যারা মহামানব হয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন, তারাই একমাত্র ফুলের দেখা পান।

ফুলের পরিবর্তে ঘিলা (বীজ গোটা) পবিত্র হিসেবে সংগ্রহ রাখেন তঞ্চঙ্গ্যারা। ঘিলা বাড়িতে রাখলে বজ্রপাত বিপদ এবং অপদেবতা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না। ঘিলা খেলা টুর্নামেন্টে ৩২টি পাড়ার তরুণ-তরুণী দল অংশগ্রহণ করছে। এ ছাড়াও বয়স্ক পূজা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।

অপরদিকে বুধবার সাংগ্রাই র‌্যালির মাধ্যমে মারমা অধ্যুষিত বান্দরবানে তিন দিনব্যাপী জমকালো সাংগ্রাই উৎসব শুরু হবে। প্রথম দিনে পুরাতন রাজবাড়ী মাঠ থেকে আপন ঐতিহ্যে সাজো : বর্ণাঢ্য সাংগ্রাই র‌্যালির মাধ্যমে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠানমালা। র‌্যালির নেতৃত্বে দিবেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। র‌্যালিতে মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, চাক, খেয়াং, খুমী, বম, লুসাই, পাঙ্খোয়া সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী এবং শিশু-কিশোরসহ নারী-পুরুষেরা অংশ নেয়।

সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং মারমা বলেন, মূল অনুষ্ঠানমালা তিনদিন। তবে পাহাড়ী পল্লীগুলোতে উৎসব চলবে আরও কদিন। প্রথমদিনে সাংগ্রাই র‌্যালি হবে সকালে। তার পর বষস্ক পূজা, বিহারগুলোতে ছোয়াইং দান হবে। পরেরদিন বুদ্ধমূর্তি স্নান, পিঠা উৎসব, মঙ্গল প্রদ্বীপ প্রজ্বালন করা হবে। তৃতীয় দিন হবে মৈত্রী পানি বর্ষণ বা জলকেলি উৎসব এবং রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এটি হচ্ছে মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব।

 

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়