বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৩, ২০২৪
spot_img
Homeএই মুহুর্তেকরমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির তাগিদ চেম্বার সভাপতির

করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির তাগিদ চেম্বার সভাপতির

প্রাইম ডেস্ক »

কর ব্যবস্থাকে কীভাবে আরও সহজ করা যায়, করের বোঝা কমানো যায় ও সহজ পরিবেশ তৈরি করা যায়— সেই লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম চেম্বারের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর পরিশোধ করার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে। এছাড়া কর আদায়ে অটোমেশন ব্যবস্থা যুক্ত করার কাজ চলছে। এটি করলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি বলেন, যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান রিটার্ন দাখিল করছে না, তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। বৃহৎ কোম্পানিসমূহের অনলাইন ব্যবসাকে করের আওতায় আনা হচ্ছে। এসএমই খাতের উন্নয়নের স্বার্থে সক্ষমতা অর্জিত হলে দেশে উৎপাদিত হয় এমন পণ্য আমদানি করা হবে না।

শিল্পোদ্যোক্তারা জিডিপিসহ দেশের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখেন উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, কোন কোন খাতকে অগ্রিম প্রদেয় করদায় থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি দেওয়া যায়, তা বিবেচনা করা হবে। দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষায় শিল্প খাতে আমদানিকৃত লবণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রাক বাজেট আলোচনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনলাইন ব্যবসায়ীদের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অনলাইন ব্যবসা মাত্র বিকশিত হচ্ছে। তাদের ওপর কর আরোপ না করারও অনুরোধ রয়েছে। তাদের কঠিন হাতে ধরা যাবে না। এ খাতে নারী ও তরুণ প্রজন্মের আত্মকর্মসংস্থান বেড়েছে। আমরা কড়াকড়ি করতে চাই না। তবে বড় বড় অনলাইন ব্যবসায়ীদের করের আওতায় এনেছি।

মতবিনিময় সভায় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মনে করি। বিভিন্ন কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই এ সীমা তিন লাখ টাকা থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, পরবর্তী চার লাখ টাকা পর্যন্ত পাঁচ শতাংশ, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫, সাত লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং তদূর্ধ্ব ২৫ শতাংশ হারে কর নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।

চেম্বার সভাপতি বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর যাবত সমগ্র পৃথিবীর ব্যবসা-বাণিজ্য অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রায় লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজসহ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া যথেষ্ট কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে মহামারি প্রকোপ অনেকটা কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মোটামুটি পূর্ণ উদ্যোমে চালু হয়েছে। তাই আগামী বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়কে প্রাধান্য দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

বৃহত্তর চট্টগ্রামে গভীর সমুদ্রবন্দর, মহেশখালী পাওয়ার হাব, বঙ্গবন্ধু টানেল, বে-টার্মিনাল, বিমানবন্দর এক্সপ্রেসওয়ে, মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর ইত্যাদি মেগা প্রকল্প দ্রুতগতিতে এবং নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার দাবি জানান চেম্বার সভাপতি।
চেম্বার সভাপতি বলেন, চেম্বারের পক্ষ থেকে শুল্ক সংক্রান্ত ৮৪, ভ্যাট সংক্রান্ত ২২ এবং আয়কর সংক্রান্ত ১০২টি প্রস্তাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা লৌহ ও লৌহজাত পণ্য সেক্টরে সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর কর্তনের হার দুই শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান । এছাড়া এলপি গ্যাস শিল্পে বিক্রয় পর্যায়ে বিক্রিত মূল্যের ওপর আরোপিত সাত শতাংশ হারে ভ্যাট বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি দুই টাকা ট্যারিফ ভ্যাট প্রবর্তনের প্রস্তাব করেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, চট্টগ্রামে শিপ রিসাইক্লিং শিল্প দেশের স্টিল সেক্টরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব করার ক্ষেত্রে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ ইয়ার্ডগুলোকে গ্রিন ইয়ার্ড করার প্রয়োজনে আমদানিকৃত মূলধনী যন্ত্রপাতি ১০০ শতাংশ শুল্কমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন।

মতবিনিময় সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মাসুদ সাদিক, জাকিয়া সুলতানা ও সামস উদ্দিন আহমেদ, চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বক্তব্য রাখেন। এ সময় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা চেম্বারের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়