শনিবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২৪
spot_img
Homeসংবাদসারাদেশপিএইচপি কুরআনের আলোয় প্রথম হয়েছেন হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া

পিএইচপি কুরআনের আলোয় প্রথম হয়েছেন হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া

প্রাইম ভিশন ডেস্ক »

দেশ-বিদেশে সাড়া জাগানো পিএইচপি কুরআনের আলো সেরা প্রতিযোগী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জামালুল কুরআন হিফজ মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া।

দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন মারকাযুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ আনাস। তৃতীয় স্থান অধিকারী হয়েছেন কুরআনের আলো ইনস্টিটিউটের ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন কুমিল্লার তাহফিজুল কুরআনিল কারিম হিফজ মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠানে সর্ববৃহৎ টেলিভিশনভিত্তিক জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা ২০২২ পিএইচপি কুরআনের আলোর চার প্রতিযোগির মধ্য থেকে প্রধান প্রতিযোগিকে বাছাই করা হয়। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার এনটিভি সরাসরি অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করেছে।

অনুষ্ঠানে প্রথম প্রতিযোগিকে দেওয়া হয় চার লাখ টাকা, দ্বিতীয় প্রতিযোগিকে তিন লাখ, তৃতীয় প্রতিযোগীকে দুই লাখ টাকা ও চতুর্থ প্রতিযোগিকে সান্ত্বনা পুরস্কার এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া প্রত্যেক প্রতিযোগিকে ইলেভেন জেনারেশনের ল্যাপটপ দেওয়া হয়। যার মূল্য লাখ টাকারও বেশি। এ ছাড়া প্রথম তিনজনের ওস্তাদদের দেওয়া হয় মোটরসাইকেল।

এবারের সেরা চার প্রতিযোগী ছিল- কুমিল্লার তাহফিজুল কুরআনিল কারিম হিফজ মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকার মারকাযুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ আনাস, ঢাকার কুরআনের আলো ইনস্টিটিউটের ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মারুফ, নেত্রকোনার জামালুল কুরআন হিফজ মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া।

শাহ ইফতেখার তারিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কুরআনের আলো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা আবু ইউসুফ, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আব্দুল হক, আন্তর্জাতিক হাফেজ ও কারি সিলেকশন বোর্ডের হাফেজ কারি জহিরুল ইসলাম, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ সুফি মো. মিজানুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইনফিনিটি মেগামলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুনাইদ, সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফেজ মো. এনায়েত উল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ছাড়াও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতগণ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করীম বলেন, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে এটার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। দেশের এক পঞ্চমাংশ ছাত্র হলো মাদ্রাসার। প্রধানমন্ত্রী সব সময় দেশের মাদ্রাসাগুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা ছাত্রদের মাস্টার্সের মান দিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের মাদ্রাসার ছাত্ররা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, দেশে ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস হবে না।

বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশ-বিদেশে সাড়া জাগানো পিএইচপি কোরানের আলো অনুষ্ঠান পরিচালনায় যারা এগিয়ে এসেছেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এনটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ মোসাদ্দেক আলী আপনাদের সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ সুফি মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মাত্র নয় মাসে দেশ স্বাধীন করে সারা বিশ্বে বিস্ময় তৈরি করেছি। এক সময় ৬ কোটি মানুষের দেশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। বর্তমানে ১৮ কোটি মানুষের মাঝেও খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, খেলাধুলায় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উৎসাহ দিয়ে থাকেন। খেলোয়াড়দের মতো দেশ-বিদেশে কুরানের এ পাখিরা ও প্রথমস্থান অর্জন করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছেন। এসব বাচ্চাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি উৎসাহ দেন, তাহলে অনেক খুশি হবো।

এবারের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৪ বছর পূর্ণ করেছে পিএইচপি কুরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে অনুষ্ঠান। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসায় বারবার সিক্ত হয়েছে এ অনুষ্ঠান। খুদে হাফেজদের কণ্ঠে মহাগ্রন্থ আল কোরআনের বাণী দর্শকদের যেমন বিমোহিত করেছে, তেমনি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে কোরআনের আলোকিত বার্তাও। কণ্ঠের মাধুর্য, শুদ্ধ উচ্চারণ আর ইসলামের শান্তিময় আবেশ ছড়িয়ে রমজান মাসজুড়ে দর্শকদের মহাগ্রন্থ আল কোরআনের শাশ্বত বাণীতে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন এসব খুদে হাফেজ। ইসলামের শান্তি সাম্য আর ভ্রাতৃত্বকে উড্ডীন করে খুদে হাফেজদের কণ্ঠে উচ্চারিত কোরআনের এই আলো আলোকিত করেছিল শ্রোতাদের হৃদয়। উপস্থিত সবার কণ্ঠেই ছিল এমন নান্দনিক আয়োজনের গুণগান। প্রতিবছর জাঁকজমকপূর্ণ গ্র্যান্ড ফিনালেতে খুদে হাফেজদের তিলাওয়াত শুনতে আসেন সুধীজন, গুরুজনেরাও। মধুর তিলাওয়াত ও বিচারকদের কঠিন প্রশ্নোত্তরের অনুষ্ঠান শেষে ঘোষণা করা হয় বিজয়ীর নাম।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘সারা দেশের ২২ হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে বাছাই করে আমরা টিভি অনুষ্ঠানের জন্য ৩৯ জনকে চূড়ান্ত করি। সেখান থেকে মাত্র চারজনকে বাছাই করা ছিল অনেক কঠিন কাজ। আমাদের বিচারকেরা ও এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ফাইনাল পর্যায়ে আসতে পেরেছি।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়