সোমবার, অক্টোবর ৭, ২০২৪
spot_img
Homeটপ নিউজঢাকার নিউমার্কেট এলাকা রণক্ষেত্র, আহত ৩০

ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা রণক্ষেত্র, আহত ৩০

প্রাইম ডেস্ক »

দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তাদের এ সংঘর্ষ শুরু হয়। বেলা ২টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে।

এদিন সকাল ১১টা থেকে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। সকাল থেকেই ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

সকাল ১০টার দিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট থেকে ঢাকা কলেজ পর্যন্ত রাস্তায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা ৪-৫টি টায়ার জ্বালায়। এতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে অন্তত ৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট এলাকায় একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো ছ ৭১-২২৫২) ভেঙে ফেলেন। এ ছাড়া, রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সের কাঁচ ভেঙে ফেলেন।

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৫ জন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। তারা হলেন, দীপ্ত টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক আসিফ সুমিত, ক্যামেরা পারসন ইমরান লিপু, এস এ টিভির ক্যামেরা পারসন মো. কবির হোসেন, বাংলা টিবিউনের রিপোর্টার সাহেদ শফিক, মানবজমিনের রিপোর্টার শুভ্র দেব।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।

সকাল থেকে পুলিশের তেমন উপস্থিতি দেখা না গেলেও দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ জলকামান নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নেয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, সোমবার রাতে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে যান ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

অপরদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র রাতে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে খাবার খান। তবে টাকা না দিয়েই তারা চলে যাচ্ছিলেন। এ নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় দোকানের লোকজনের। এরপরই ঢাকা কলেজের ছাত্ররা দোকান ভাঙচুর করেন। পরে ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে বের হন বলে দাবি তাদের।

এদিকে ঢাকা কলেজের মঙ্গলবারের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কলেজের সব শিক্ষককে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ অনুরোধ জানিয়েছেন।

এরআগে সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রাত দুইটার দিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র নিউমার্কেটে যায়। যে দোকানে তারা গিয়েছিল সেই দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে তাদের তর্ক হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, সেই কর্মচারী তাদের গায়ে হাত তুলে। পরে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য দলবল নিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় আসে। এ সময় তারা প্রথমে নিউ মার্কেটের ৪ নং গেইট ও পরে ২ নং গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করে। দুই নং গেইট ভেঙে ভেতরে কয়েকজন ঢুকেও পড়ে। পরে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে হল ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করি।

ডিসি সাজ্জাদ রহমান বলেন, এটা রমজান মাস। রমজানের শেষদিকে চলে এসেছে। এখন দোকানপাট বন্ধ রাখার দাবি কোনো বিবেচনা প্রসূত কাজ নয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।

তারা বলেছেন, তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন। যদি কোনো সমঝোতার প্রয়োজন হয় তাহলে সেটি তারা করবেন। মার্কেটের সাথে দ্বন্দ্ব নিরসনের উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু মার্কেট খুলতে না দেয়ার বিষয়টি যথাযথ সিদ্ধান্ত নয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়