শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
spot_img
Homeমুল পাতাদেশব্যাপী আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা

দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা

প্রাইম ভিশন ডেস্ক »

অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ ও “অপশাসন-নির্যাতনের” প্রতিবাদে আগামী ১৮ই ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার দাবির লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করবে দলটি। ৬ ফেব্রুয়ারি দেশে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার অবরোধ এবং ১৮ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘কঠোর’ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা প্রত্যাহার এবং “প্রহসনমূলক বিচার” বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। এছাড়া, বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনাকে “প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে উল্লেখ করেছে ক্ষমতাচ্যুত দলটি। তবে, বিজ্ঞপ্তিতে দলটির সংশ্লিষ্ট কোনো নেতা-কর্মীর স্বাক্ষর ছিল না।

 

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে দলটির কোনো সক্রিয় কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়নি। দলের প্রধান নেতা-কর্মীর বেশিরভাগই দেশের বাইরে আছেন, কেউ পলাতক রয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন নেতা একাধিক মামলায় আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন। দলের কয়েকজন নেতাকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু বিবৃতি দিতে দেখা গেলেও, এখন আর দলের কোনো নেতৃত্ব বা কার্যক্রম স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান নয়। এমনকি ঢাকায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।

গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর সেখানেই অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি হত্যা, গণহত্যা, গুম ও নির্যাতনসহ একাধিক মামলা করা হয়েছে। চলমান মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। তার প্রত্যর্পণের জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।

দলের এরকম অবস্থায় ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী আওয়ামী লীগের কর্মসূচির বাস্তবায়ন কিছুটা অবাস্তব বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে গত ১০ নভেম্বর রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েও নামতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

ফেসবুকে পেজ থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, “দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের এ সকল কর্মসূচিতে কোনো প্রকার বাধা প্রদান করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

তবে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ফলে, দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের কোনো বৈধ কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই। দেশের বিভিন্ন শহরে, মহল্লায় কিংবা গ্রামে দলটির অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রমও দৃশ্যমান নেই। এমতাবস্থায় ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জসহ দেশের অল্প কিছু জায়গায় দলটির নেতা-কর্মীদের মিছিল করতে দেখা গেলেও, সেটি ছিল ঝটিকা মিছিল। মিছিলে অংশগ্রহণকারী অনেকেরই মুখ ঢাকা ছিল। কোনো কোনো মিছিলে ১০ জনের বেশি নেতা-কর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। তাই ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ তাদের ঘষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে কিংবা নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কেমন হবে, সেটাই এখন এক বড় কৌতূহলের বিষয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

পাঠক প্রিয়

সৌদি-মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের জন্য কমলো বিমানের ভাড়া

চবিতে ১০ জন ছাত্রীকে বহিষ্কার