প্রাইম ডেস্ক »
২০২০ সালে অন্যান্য সব আয়োজনের মতো চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ও মেলা থামিয়ে দিয়েছিল মহামারি করোনা। এর পরের বছর ২০২১ সালেও একই কারণে হয়নি এ উৎসব। তবে চলতি বছর বলীখেলা ও মেলার ১১৩ তম আসর হওয়ার কথা থাকলেও লালদীঘি মাঠের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় তা স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন আয়োজকরা।
আর এতেই সংস্কৃতিপ্রেমীদের মাঝে দেখা দেয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। এ অবস্থায় নিজেই উদ্যোগী হয়ে বলীখেলা ও মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। শনিবার সকালে বহদ্দারহাটে নিজ বাসভবনে ‘আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি’র সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করে বলীখেলা ও মেলা আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ১২ বৈশাখ (২৫ এপ্রিল) আবদুল জব্বারের বলীখেলা হবে। তবে এবার লালদিঘী মাঠে নয়, খেলা হবে মাঠের সামনের খোলা রাস্তায়। একই সঙ্গে হবে মেলাও। আগে পাঁচদিন হলেও এবার মেলা হবে তিনদিন। ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বৈশাখী মেলা।
এ সময় তিনি বলেন, প্রতিবারই লালদীঘির মাঠে মাটির ওপর বালি দিয়ে বলী খেলা হতো। এখন আধুনিক যুগ। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে রেসলিংয়ের আদলে খেলার স্টেজ (মঞ্চ) তৈরি করা হবে।
মেয়র বলেন, কয়েকদিন আগে একটা ঘোষণা এসেছিল, এবার নাকি আবদুল জব্বারের বলীখেলা হবে না। এটা জানার পর সবার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। অনেকে মোবাইলে সেই হতাশার কথা আমাকে জানান। তারা প্রশ্ন করেছেন- কেন বলীখেলা ও মেলা হবে না। এরপর আমি বললাম- মেলা অবশ্যই হবে। সেজন্য আয়োজক কমিটির সবাইকে ডেকে কথা বললাম। বৈঠকে মেলা ও খেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১২ বৈশাখ বিকেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত বলীখেলা হবে জেলা পরিষদ চত্বরে। আর মেলা হবে ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ।
মেলা আয়োজক কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির সভাপতি চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল ও সাবেক কাউন্সিলর জামাল হোসেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর বলীখেলা চালু করেন। এরপর থেকে প্রতি বাংলা বছরের ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে এ খেলার আয়োজন করা হয়। ব্যবসায়ী আবদুল জব্বারের নামানুসারে খেলাটির নাম রাখা হয় ‘জব্বারের বলীখেলা’। এ বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে মেলা।